পানির অভাব নেই লেবাননে। প্রায় ৭০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটিকে ঘিরে আছে ২২টি ছোটবড় নদী। তা সত্ত্বেও বিশুদ্ধ পানির অভাবে ধুঁকছে পশ্চিম এশিয়ার দেশটির মানুষ।
লিটানি, আরকা, কাদিশা, আব্রাহাম, বৈরুত, দামৌর, আওয়ালি, জাহরানি নামের নদীগুলো নিজেরাই যেন বিশুদ্ধ পানির অভাবে আজ মৃতপ্রায়।
কারণ দেশটির পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা এতটাই নাজুক যে, ময়লা-আবর্জনা আর কল-কারখানার বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে পড়েছে নদীগুলোর পানি।
বিশেষ করে দেশের সবচেয়ে বড় লিটানি নদীর পানি শতভাগ বিষাক্ত। যে কারণে প্রতি সপ্তাহে বিশুদ্ধ পানি পেতে লাখ লাখ লেবানিজ পাউন্ড খরচ করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। দেশটিতে এখন দেড় লিটারের পানির বোতলের দাম ১২২৫ লেবানিজ পাউন্ড (৭৫ টাকা)। এপি
লেবাননের বিশুদ্ধ পানিসংকট তীব্র। সেই সংকট উত্তরণে অর্থনৈতিকভাবে চাপে পড়েছে পরিবারগুলোর নিত্যজীবন, ব্যবসায়িক কার্যক্রম। প্রচুর পানিসম্পদ থাকা সত্ত্বেও সেগুলো সংরক্ষণ ও সুরক্ষার কৌশল বাস্তবায়ন না হওয়ায় পৃথিবীর অন্যতম পানি সংকটের দেশে পরিণত হয়েছে লেবানন।
এ সংকট থেকে বাঁচতে পানি কম ব্যবহারের দিকে ঝুঁকতে গিয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন নাগরিকরা। অন্যদিকে তাদের পানির ঘাটতি পূরণ করতে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে দিতে হচ্ছে তাদের আয়ের বিরাট অংশ। পরিবারপ্রতি সপ্তাহে পানি বাবদ খরচ হচ্ছে ১০ লাখ লেবানিজ পাউন্ডেরও বেশি। কম করে হলেও সপ্তাহে পরিবারপ্রতি এ খাতে খরচ করতে হয় ছয় লাখ ৭৫ হাজার লেবানিজ পাউন্ড (প্রায় ৪২ হাজার টাকা)।
লেবাননের পরিবেশগত প্রকৌশলী মিশেল ফ্রেম জানিয়েছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন পানি সম্পদের প্রাপ্যতা এবং তীব্রতাকে প্রভাবিত করতে শুরু করেছে, এটা ঠিক। দীর্ঘ বছরের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে সুপেয়ে পানি সংকট এতটা তীব্র হয়েছে।’ জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ভবিষ্যদ্বাণী করে জানিয়েছে, পাবলিক ওয়াটার সাপ্লাই বন্ধ হয়ে গেলে বেসরকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে পানি কিনতে বাধ্য হবে লেবানিজরা। তখন পানির খরচ বেড়ে যাবে ২০০ শতাংশ।