রাজনৈতিক দলগুলোকে হতে হবে পরমত সহিষ্ণু : রাষ্ট্রপতি

0

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে হলে পরমত সহিষ্ণুতাসহ সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে একে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানান। রাজনীতিতে সহমত সংস্কৃতি গড়ে তোলা অপরিহার্য উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে এ আহ্বান জানান।

একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপের অংশ হিসেবে আজ সোমবার গণতন্ত্রী পার্টি এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সাথে পৃথক পৃথক আলোচনায় বসেন রাষ্ট্রপতি।

সন্ধ্যায় গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনের দরবার হলে আলোচনায় অংশ নেন।

সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, গণতন্ত্রী পার্টির ইসি গঠনে আইন প্রণয়ন এবং সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনসহ আট দফা প্রস্তাবনা দেন রাষ্ট্রপতির কাছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের চেয়ারম্যান মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজি এবং মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাাহ মিয়াজীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেন। সংলাপে তারা একটি নিরপেক্ষ, সক্ষম, শক্তিশালী, দক্ষ ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের গঠনের জন্য একটি স্থায়ী আইন প্রণয়নসহ ছয় দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন রাষ্ট্রপতির কাছে।

সংলাপে গণতন্ত্রী পার্টির নেতারা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের ও প্রস্তাব করেন।

তারা প্রস্তাব করেন, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলের নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করা যেতে পারে এবং এই কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির নিকট প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে নাম প্রস্তাব করবেন। তারা নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে যোগ্য, দক্ষ, নির্মোহ, সৎ ও জনগণের আকাঙ্খার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদেরকে নিয়োাগ দেয়ার প্রস্তাব করেন।

গণতন্ত্রী পার্টির নেতারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে এবং নির্বাচনে ধর্মের অপব্যবহার, কালো টাকা, অস্ত্র ও পেশিশক্তির ব্যবহারকারীদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার ও শাস্তি দানের ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা এবং কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

সংলাপে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারা নির্বাচন কমিশনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর লক্ষ্যে ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন।

তারা বলেন, ধর্মবিদ্বেষী, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, কালো টাকার মালিক, অবৈধ সম্পদের অধিকারী, সন্ত্রাসী, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী, ঋণখেলাপির সাথে জড়িত পরিবারবর্গকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক রাজনৈতিক দলগুলোর সকল কমিটিতে ৩৩ শতাংশ মহিলা সদস্য রাখার প্রস্তাবকে বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব দেন। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।

নেতৃবৃন্দকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন যাতে গঠন করা যায় সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সুচিন্তিত মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সকল রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দলকে জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে